কক্সবাজারে কোর্ট পুলিশের চাদাঁবাজিতে অতিষ্ট হাজতি ও স্বজনরা দৈনিক লাল সবুজের দেশ দৈনিক লাল সবুজের দেশ প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫ হাবিবুর রহমান সোহেল,কক্সবাজার থেকে… সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা পুলিশের দূর্নীতিবাজ ও ঘুষখোর সদস্যের সরিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ। তবে এসপির এমন মহৎ কাজকে ধুলিস্যাৎ করতে মরিয়া কিছু দূর্নীতিবাজ ও বিপদগামী পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে অন্যতম কক্সবাজারের কোর্ট পুলিশ। যার জ্বলন্ত প্রমান কক্সবাজার আদালতস্থ হাজতগুলোতে পুলিশের ব্যাপক চাঁদাবাজি চলছে সমান তালে। প্রকাশ্যে আসামী স্বজনদের নিকট হতে এ চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে এমন অভিযোগ শত শত ভুক্তভোগিদের। এতে করে আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের পাশাপাশি চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে আসামী স্বজনরা। রামুর সেলিম, মোক্তার, কাসেমসহ অনেকে জানান, কক্সবাজার আদালতের হাজতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা আসামীদের স্বজনদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন বেপরোয়া চাঁদা আদায় করছে। একই সাথে হাজতীর সাথে দেখা করা ও খাবার সরবরাহ করাসহ নানাভাবে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট পুলিশেরা। অনেক সময় টাকা না দিলে আসামী স্বজনদের উপর নানাভাবে মানসিক অত্যাচার চালানোর অভিযোগও উঠেছে এসব পুলিশের বিরুদ্ধে। এমন ঘুষ ও চাদাঁবাজির নেতৃত্বে দিচ্ছেন, কোর্ট পুলিশের সদস্য আরফাত, ইয়াছিন, ওয়াহেদ, হায়দার, মনিরসহ ১০/১৫ জনের একটি সেন্ডিকেট।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজত পুলিশের দায়িত্বরত এসব পুলিশ সদস্য প্রতিদিন প্রতি আসামীর সাথে স্বজনদের দেখা করতে ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর খাবারের ক্ষেত্রে ৩ শ, থেকে ৭ শ পর্যন্ত চাদাঁ আদায় করছে। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত আসামী স্বজনারা আদালত হাজতের সামনে অপেক্ষা করে। পরে তারা আদালত হাজতে ঢুকতে চাইলে ঘটে বিপত্তি। প্রতিজন নুন্যতম ১শ টাকা না দিলে কোন অবস্তাতে ঢুকতে দিচ্ছে না দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। এসময় আরো দেখা গেছে পুলিশ সদস্যরা কৌশলে আদালত হাজতের বা ব্যাকে ভিতর নিয়ে গিয়ে দেখা করতে আসা লোকজনের কাজ থেকে চাঁদা আদায় করছে। কান্না জড়িত কন্ঠে আসামীদের সাথে দেখা করতে আসা, আমিন, শাহিন, কবির আহম্মদ, মনির, সুলতান আহম্মদ, জসিম উদ্দিন, রাফি আক্তার, মরিয়ম, শাহেনা আক্তারসহ অপেক্ষামান সবাই জানান, আদালত হাজতে টাকা ছাড়া কোনা অবস্থাতে কোর্ট পুলিশরা ঢুকতে দেয় না। জনপ্রতি নুন্যতম ৩শ টাকা দিতে হচ্ছে। আর দিতে না পারলে পুলিশের বিভিন্ন মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বজনদের সাথে দেখা না করে চলে যেতে হচ্ছে। চকরিয়ার কলিম জানান, একটি মামলা নিয়ে আমার ছেলে দীর্ঘ দিন ধরে কারাভোগ করছে। তার জন্য মামলা চালাইতে গিয়ে আমার সব সহায় সম্বল শেষ হয়ে গেছে। আজ ছেলেকে কোর্টে তুলার কথা। ঘরের পালিত মুরগি বিক্রি করে উকিল ফি দিয়েছি। আর ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে এসেছি। যাবার জন্য গাড়ি ভাড়া ও নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোর্ট পুলিশরা টাকা ছাড়া কোর্ট হাজতে কিছুইতে খাবার ঢুকাতে দিচ্ছে না। উখিয়া থেকে আগত হাজেরা খাতুন জানান, সকাল থেকে তার স্বামী মো: হাশেমকে একবার দেখার জন্য কোর্ট হাজতের সামনে বসে আছি। কিন্তু টাকা ছাড়া কোর্ট পুলিশরা ভিতরে কিছুইতে ঢুকতে দিচ্ছে না। এসব অনৈতিক টাকা আদায়ের কারণে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে আসামীদের স্বজনরা। কোর্ট সংশ্লিষ্টদের মতে অতীতের সকল অনিয়মের রেকর্ড ভেঙ্গে বন্দীদের দেখতে আসা স্বজনদের দুর্বলাতার সুযোগ নিয়ে কোর্ট হাজতে দায়িত্ব থাকা কনেষ্টেবলরা হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে প্রতিদিন। এ নিয়ে খোদ পুলিশের মাঝে চলছে কানাঘোষা। এসব অপকর্মের আশ্রয়-প্রশ্রদাতা হিসাবে রয়েছে কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানী। এভাবে আসামীদের দুর্ববলতার সুযোগ নিয়ে কোর্ট পুলিশের সদস্যরা চাঁদা আদায় করছে। তার জন্য বন্ধীদের স্বজনরা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তেক্ষেপ কামনা করছে। এব্যাপারে কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানী প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন কেটে দিয়ে, ওয়াসআপে বল করে তার অফিসে কথা বলার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, টাকা পয়সা নেওয়া এখন একেবারে বন্ধ রয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ জানান, এই ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোন পুলিশ সদস্য এরকম অনৈতিক ভাবে টাকা নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সংবাদ প্রেরক হাবিবুর রহমান সোহেল ০১৮২২৭৮১৩১৩ SHARES অপরাধ বিষয়: