ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
Oplus_16908288

অপরাধ জগতে রিপোর্ট

অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রওশন আলীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, ওসি ‘টাকা পেলে সব করেন’। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বিনা অপরাধে গ্রেফতার, নির্যাতন, পক্ষপাতমূলক মামলা গ্রহণ, অর্থের বিনিময়ে মামলা থেকে ছাড় দেওয়া এবং সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার।

৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিজয়নগরের চান্দুরা থেকে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন, তার ভগ্নিপতি মো. সালমানসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। চাচির কাছে থাকা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সাজ্জাদ অভিযোগ করেন— থানায় নিয়ে গিয়ে ওসি ও তিনজন সদস্য এক ঘণ্টা চোখ বেঁধে নির্যাতন চালান। তাদের ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

পরদিন জামিনে ছাড়া পেয়ে থানায় গেলে ফোন ফেরত দিলেও টাকার বিষয়ে মিথ্যে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয় ভিডিওতে। পরে শুধু ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়, বাকি অর্থ আত্মসাৎ করেন ওসি। সেই সঙ্গে বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেন।

১৫ রমজান রাতে বিজয়নগরের ভিটিদাউদপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় রত্না আক্তারের ভাই ও ভাতিজা গুরুতর আহত হন। শরীরে ১০০-এর বেশি সেলাই লাগে। অথচ থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও ওসি মামলা নেননি। উল্টো প্রতিপক্ষের পক্ষেই মামলা গ্রহণ করেন।

২৩-২৪ বছর সৌদি আরবে কাটানো জয়নাল আবেদীন মুন্সী দেড় বছর আগে দেশে ফেরেন। রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকা সত্ত্বেও ৪ এপ্রিল রাতে কয়েকজন লোক তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে পুলিশে দেন। তার স্ত্রী দাবি করেন— “রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে স্বামীকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে।”

ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রাতে হরষপুর থেকে দুটি ট্রাক্টর জব্দ করে ১ লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে আরও তিনটি ট্রাক্টর আটক করে ৬৭ হাজার টাকা আদায় করেন। এসব অর্থ গ্রহণের বিনিময়ে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

ঈদের দিন সাতগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শাহীন মিয়াকে প্রতিপক্ষের সাতজন লোক প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে। মাথায় চারটি ও মুখে তিনটি সেলাই লাগে। থানায় অভিযোগ দিলেও ওসি তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেননি।

ওসি রওশন আলী বলেন, “সৌদি প্রবাসী জয়নাল আওয়ামী লীগের নেতা। তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অনেক কিছু আমার মনে নেই।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, “কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধে জড়িত থাকলে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”