ভৈরবে সিভিল সার্জন জালাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধেঅন্যের জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন।

প্রকাশিত: ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২৫

২ এপ্রিল,এম এ হালিম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

বাগেরহাটে ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে “জয় বাংলা” শ্লোগান দেয়া সিভিল সার্জনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্ত (ওএসডি) করার একদিন পর বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো সেই বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাক্তার জালাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অন্যের জায়গার একাংশ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্ঠগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর পুত্র অভিযুক্ত ডাক্তার জালাল উদ্দিন আহমেদ ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরিকালে শহরের কমলপুর নিউটাউন এলাকায় কমলপুর মৌজার ৬৮১৩ দাগে প্রায় দেড় কোটি টাকায় ৬.৬৪শতাংশ জায়গা কিনেন। পরে তিনি তার ক্রয়কৃত ৬৮১৩ দাগের জায়গা লাগোয়া ভুক্তভোগী জুম্মান মিয়ার ৬৮১০ দাগের প্রায় ২শতাংশ জায়গা জবরদখল করে ৬তলা ভবন নির্মাণ করেন।
২এপ্রিল, বুধবার দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার হাজী মনু বেপারী বাড়ির যুবদল নেতা ভূক্তভোগী মোঃ জুম্মান মিয়া। ওই ৬তলা ভবনের নির্মাণ কাজ করার সময় ভূক্তভোগী জুম্মান মিয়া বাধা প্রদান করলেও তখন আওয়ামীলীগের ক্ষমতা দেখিয়ে জোরপূর্বক ভবন নির্মাণ করেন এবং ওই ভূক্তভোগীকে পুলিশ ও বিভিন্ন আওয়ামীলীগে লোকজনের মাধ্যমে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়। ভুক্তভোগী জানান, জায়গা ফিরে পেতে সাবেক সিভিল সার্জন জালাল উদ্দিন আহমেদের কাছে বারবার যাওয়ার পরও কোন সূরাহা হয়নি। আমিনের মাধ্যমে একাধিক বার জায়গা মাপার পর দখলের প্রমাণ পেলেও বিষয়টি সমাধান না করে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করার পায়তারা করছে।
তিনি বলেন, একজন সরকারি চাকুরিজিবি হয়ে ডাক্তার জালাল উদ্দিন কিভাবে দেড় কোটি টাকার জায়গা কিনেন এবং কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ৬তলা বিশিষ্ট আলিশান বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন। তাছাড়া তিনি বিভিন্ন স্থানে নামে বেনানে বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব টাকার উৎস খুঁজে বের করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা ও তার দৃষ্টান্ত শাস্তি কামনা করেন।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আর্শিবাদপুষ্ট সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার জালাল উদ্দিন অন্যের জায়গা দখল করে বিল্ডিং নির্মাণ করায় ওই জায়গা ফিরে পেতে এবং তার হয়রানি থেকে রেহাই পেতে বর্তমান সরকার, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট হস্তক্ষেপ কামনা করেন ওই ভুক্তভোগী জুম্মান মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী মো: জুম্মান মিয়া, অনন্ত আহামেদ ও ভৈরব গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জোবায়ের মাহমুদ আফজাল প্রমুখ।

ভৈরব গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল বলেন, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সিভিল সার্জন ডাক্তার জালাল উদ্দীন আহামেদ বাগেরহাটের সিভিল সার্জন থাকাকালী সম্প্রতি জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ছাত্রজনতার তোপেরমুখে ওএসডি হওয়ার একদিন পর তাকে বাধ্যতামুলক অবসরে পাঠান সরকার। সে আওয়ামীলীগের ক্ষমতা দেখিয়ে ভুক্তভোগী জুম্মান মিয়ার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বিল্ডিং কোড অমান্য করে ৬তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার বেতন কত এবং পরিবারের খরচ মিটিয়ে কিভাবে এতটাকা দিয়ে বাড়ি কিনে ৬তলা বিল্ডিং করেছে। তার টাকার উৎস কোথায় তা খুঁজে বের করতে দুদকের অনুসন্ধান ও তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি তার ক্রয়কৃত জায়গায় বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন। এনিয়ে কয়েক বার জায়গা মাপও করেছেন। জায়গায় যদি সমস্যা থাকে তাহলে প্রতিপক্ষকে মামলা করতে বলেন। সর্বশেষ তিনি পরিবারের সাথে পরামর্শ করে জায়গা মাপ করে সূরাহা করবেন বলেও জানান।